ফ্লাইং নেকেড নামটা শুনে হয়তো অনেকেরই চোখ কপালে উঠছে। মনে হতে পারে, এটা আবার পোশাকবিহীন সফর নাকি! কিন্তু না, এর সঙ্গে জামাকাপড় বা পোশাক-আশাকের কোনো সম্পর্ক নেই!
গত বছরের শেষ দিকে ইন্টারনেটে ফ্লাইং নেকেড নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। যারা মিনিমালিস্ট জীবনধারার চর্চা করেন, তাদের জন্যও এটি এখন আলোচনার বিষয়।
ফ্লাইং নেকেড বলতে, কোন ধরনের লাগেজ বা ব্যাগ ছাড়াই সফর করা। অর্থাৎ আপনি কোন ধরনের বড় ব্যাগ বা ল্যাপটপ ব্যাগ নিয়ে সফর করবেন না। আপনি চাইলে শুধু একটি ছোট ক্যারি-অন ব্যাগ নিয়ে যেতে পারেন, অথবা ফোন, মানিব্যাগের মতো প্রয়োজনীয় জিনিস পকেটে নিয়ে প্লেনে ওঠা যায়। লক্ষ্য হবে শুধু সময়মতো ফ্লাইট ধরা, লাগেজের ভার বহন নয়।
ফ্লাইটে লাগেজ চেক-ইন করতে অনেক সময় চলে যায়। একদিকে লাগেজ হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, অন্যদিকে অনেক সময় লাগেজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এসব ঝামেলা এড়াতে ফ্লাইং নেকেড হতে পারে দারুণ সমাধান।
এয়ারলাইনসের অতিরিক্ত চার্জও ফ্লাইং নেকেডের জনপ্রিয়তার কারণ। অনেক এয়ারলাইনসই লাগেজের অতিরিক্ত ওজনের জন্য মোটা অঙ্কের চার্জ দাবি করে, যা এখন অনেক যাত্রীকে কম ব্যাগ নিয়ে সফর করতে উৎসাহিত করছে।
উপমহাদেশে এখনও লোকজন তল্পিতল্পা ছাড়া ভ্রমণে অভ্যস্ত নয়। তবে মার্কিন মুলুকে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ‘স্মার্ট প্যাক, স্মার্ট ট্রাভেল’-এর এই ট্রেন্ড। তরুণরা আর অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরা ফ্লাইং নেকেডের আইডিয়া দারুণভাবে পছন্দ করছে। এতে লাগেজ গোছানোর চাপ নেই, আর চেক-ইন বা ব্যাগেজ ক্লেইমের জন্য সময়ও নষ্ট হবে না।
বিশ্বায়ন এবং সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনও হচ্ছে ফ্লাইং নেকেডের মাধ্যমে। যেহেতু পর্যটকেরা নিজেরা কম কিছু বহন করছেন, তাই স্থানীয় পোশাক-আশাক, পণ্য কিনতে স্বাভাবিকভাবেই উৎসাহ বোধ করছেন।
তবে মনে রাখতে হবে, ফ্লাইং নেকেড সবার জন্য নয়। বিশেষ করে শিশু বা অন্য কোনো বিশেষ প্রয়োজন থাকলে এটা কার্যকর নয়। লম্বা সফরের জন্য এটি তেমন উপযুক্ত নয়, কিন্তু দৈনিক সফরের জন্য একদম দুর্দান্ত।
তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস